রাসূল সা. সুগন্ধি খুবই পছন্দ করতেন এবং তিনি প্রায় সবসময় সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। সুগন্ধি ব্যবহার করা মুস্তাহাব এবং রাসূল সা.-এর সুন্নত।
নারী পুরুষ সবাই সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবে। আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করা নারীদের সাজসজ্জার অন্তর্ভূক্ত। নারীরা ঘরে নিজের পরিবারের মধ্যে, যেখানে মাহারাম থাকবে, সেখানে আতর বা সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবে। তবে তাদের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করে গায়রে মাহরাম বা পরপুরুষের সামনে বের হওয়া জায়েজ নেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
وَلَا يُبۡدِينَ زِينَتَهُنَّ
তারা যেন তাদের সজ্জা প্রকাশ না করে। (সূরা আন-নূর, আয়াত : ৩১)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সা বলেছেন-
أيما امرأة استعطرت فمرت على قوم ليجدوا من ريحها فهي زانية
যে নারী সুগন্ধি মেখে (পুরুষ) জনসমষ্টির পাশ দিয়ে গমন করে যাতে করে তার সুগন্ধি তাদের নাকে লাগে সে নারী ব্যভিচারী। (সুনানে নাসায়ী, হাদিস : ৫১২৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৮৯১৬)
ইবনে আসকালনী রহ. বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার কারণ সুস্পষ্ট। যেহেতু সুগন্ধি যৌন কামনাকে চাঙ্গা করে তোলে। তাই হাদিসে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। (ফাতহুল বারী: ২/২৭৯)
নারীদের ক্ষেত্রে ইসলাম যেহেতু শালীনতার বিধান দিয়েছে তাই নারীদের জন্য ঘরের ভেতরে সুগন্ধি ব্যবহার জায়েজ। অথবা যেখানে পরপুরুষ থাকবে না এমন জায়গায় সেন্ট, পারফিউম, বডি স্প্রে ইত্যাদিতে যদি কোনো ধরনের অ্যালকোহল বা নাপাক বস্তু মিশ্রিত না থাকে, তাহলে মুসলিম নারীরা অবশ্যই সুগন্ধি ব্যবহার করবে।
অপরদিকে, যাদের সাথে দেখা করা না জায়েজ ওই সকল পরিবেশে নারীদের সুগন্ধি মেখে চলাচল করা নিষেধ। কেননা ইসলামে নারীদের সুগন্ধি ব্যবহারের বিধান পর্দার বিধানের মতোই। অর্থাৎ নারী সুগন্ধি মেখে ঘর থেকে বের হলে শরয়ী পর্দা আদায় হয় না। হাদিসে ওসব নারীর ওপর অভিসম্পাত করা হয়েছে।
মহানবী (স.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর কোনো নারী যদি (কোনো ধরনের) সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে, তবে সে ব্যভিচারিণী।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ি)এমনকি নারীরা আল্লাহর ইবাদত করার উদ্দেশ্যে মসজিদে যেতেও সুগন্ধি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘আল্লাহর বান্দিদেরকে মসজিদে আসতে বারণ করো না, তবে তারা যেন খুশবো ব্যবহার ছাড়া সাধাসিধাভাবে আসে।’ (আহমদ, আবু দাউদ, সহিহ জামে: ৭৪৫৭)