• শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
logo

প্রভু নিত্যানন্দ : পরমেশ্বরের অবতার

টিএন২৪ ডেস্ক ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:৩৪ এএম

নবদ্বীপে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার পর উভয়ে মিলে কৃৃষ্ণ নাম/হরিনাম প্রচার করেন। তাকে পরমেশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ করুণাময় অবতার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আজকের প্রচলিত গৌড়ীয় বৈষ্ণব মত মূলত তারই প্রচারিত।

কৃষ্ণকে ভালোবেসে অনেক মহাপুরুষ ও মহীয়সী নারী নিজেদের জীবন মানব কল্যাণে উৎসর্গ করেছেন। এরকম কজন মহাপুরুষ প্রভু নিত্যানন্দ।

প্রভু নিত্যানন্দ ১৪৭৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার একচক্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হারাই পণ্ডিত এবং মাতার নাম পদ্মাবতী। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল কুবের। ছেলেবেলা থেকেই লেখাপড়ার চেয়ে ধর্মের প্রতি তাঁর অনুরাগ ছিল বেশি। তাঁর বয়সি ছেলেরা যখন খেলাধুলায় ব্যস্ত তখন তিনি মন্দিরে গিয়ে বসে থাকতেন। তিনি ছোটোবেলা থেকেই রামায়ণ, মহাভারতের চরিত্রগুলোয় অভিনয় করতেন। সারাক্ষণ কৃষ্ণচিন্তায় মগ্ন থাকতেন। কী করলে শ্রীহরির দর্শন পাওয়া যাবে এটাই ছিল তাঁর সর্বক্ষণের ভাবনা।

নবদ্বীপে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার পর উভয়ে মিলে কৃৃষ্ণ নাম/হরিনাম প্রচার করেন। তাকে পরমেশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ করুণাময় অবতার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আজকের প্রচলিত গৌড়ীয় বৈষ্ণব মত মূলত তারই প্রচারিত। তিনি সমাজের সব শ্রেণীর লোকের কাছে বৈষ্ণব মতকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তিনি ও তার সহচর দ্বাদশ গোপাল কৃষ্ণ নামে সবাইকে মাতোয়ারা করে তোলেন। নিজের শিষ্য বৃন্দাবনদাসকে তিনি চৈতন্যভাগবত রচনা করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন।

নিত্যানন্দ প্রভু খড়দহে দুর্গাপূজা শুরু করেন। তিনি কাত্যায়নী রূপে মা দুর্গার আরাধনা করেন। তাঁর অনেক বংশধরের বাড়িতে আগে এই পূজা হত। এখন ও বড়বাড়ি এবং মেজোবাড়িতে এই পূজা হয়। এই পূজা শুরু হয় উলটো রথের দিন। এখানে মা দুর্গার দু পাশে জয়া,বিজয়া থাকে ।দেবীর বাহন সিংহের মুখ ঘোড়ার মত। এখানে চালকুমড়ো বলি দেয়া হয়। নিত্যানন্দ প্রভুর ১৪তম বংশধর সরোজেন্দ্রমোহন গোস্বামী আজও এই পূজা করে চলেছেন।

প্রভু নিত্যানন্দ কোনো তর্কবিতর্ক ছাড়া সকলের মধ্যে প্রেমভক্তি বিতরণ করেছেন। তিনি কখনোই ধর্ম নিয়ে কোনো বাড়াবাড়ি করেননি। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ করেননি। তিনি হিন্দুধর্ম ও সমাজ জীবনে এক বিরাট আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ফলে সাধারণ মানুষ সমস্ত কিছু ভুলে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছিল। যে কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁর কাছে এসে পরম শান্তি লাভ করত। এমনিভাবে অসংখ্য মানুষ প্রভু নিত্যানন্দের সংস্পর্শে এসে নবজীবন লাভ করে। সার্থক হয় প্রেমভক্তি ও কৃষ্ণনামের আন্দোলন। 

প্রভু নিত্যানন্দের বাণী

মানুষে মানুষে কোনো উঁচু-নিচু ভেদাভেদ করবে না।

একমাত্র প্রেমভক্তি ও মানবপ্রেম দিয়ে মানুষকে আপন করা যায়।

কাউকে যদি ক্ষমা করো, তাহলে তুমিও ক্ষমা পাবে।

সকলকে এক কৃষ্ণনামে আবদ্ধ হতে হবে।

সংসারে সংসারী হয়ে কৃষ্ণনাম নিতে হবে।

Tags:   খবর