• শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
logo

ইসলামে গভীর রাতে ইবাদতের মাহাত্ম্য

টিএন২৪ ডেস্ক ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৫:৪৭ পিএম

কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইবাদতের মাধ্যমে নৈকট্য লাভের ও জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা তুলে ধরেছেন। সুরা আয-যুমারের নবম আয়াতে গভীর রাতে ইবাদতকারীদের প্রশংসা করা হয়েছে।

গভীর রাতের ইবাদতকে ইসলামে অত্যন্ত উত্তম ইবাদত হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। এমনকি এর ফজিলতও নেহায়েত কম নয়। তাই বিভিন্ন কারণে গভীর রাতের ইবাদত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেনো গভীর রাতের ইবাদত গুরুত্বপূর্ন। 

কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইবাদতের মাধ্যমে নৈকট্য লাভের ও জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা তুলে ধরেছেন। সুরা আয-যুমারের নবম আয়াতে গভীর রাতে ইবাদতকারীদের প্রশংসা করা হয়েছে। জানানো হয়েছে জ্ঞানী ও অজ্ঞ ব্যক্তির মধ্যে তুলনার প্রশ্নই ওঠে না। এই আয়াত আমাদের রাতের ইবাদত, আখেরাতের ভয় ও আল্লাহর রহমতের প্রতি আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে শেখায়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনে বলেন,

 اَمَّنۡ ہُوَ قَانِتٌ اٰنَآءَ الَّیۡلِ سَاجِدًا وَّقَآئِمًا یَّحۡذَرُ الۡاٰخِرَۃَ وَیَرۡجُوۡا رَحۡمَۃَ رَبِّہٖ ؕ  قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَالَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ؕ  اِنَّمَا یَتَذَکَّرُ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ 

 অর্থ: তবে কি (এরূপ ব্যক্তি সেই ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে,) যে রাতের মুহূর্তগুলোতে ইবাদত করে, কখনও সিজদাবস্থায়, কখনও দাঁড়িয়ে, যে আখেরাতকে ভয় করে এবং নিজ প্রতিপালকের রহমতের আশা করে? বল, যারা জানে আর যারা জানে না উভয়ে কি সমান? (কিন্তু) উপদেশ গ্রহণ তো কেবল বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরাই করে।

আখেরাতের হিসাব-নিকাশ না থাকলে তার অর্থ দাঁড়ায় মুমিন ও কাফের এবং পুণ্যবান ও পাপী সব সমান। এটা আল্লাহ তাআলার হেকমত ও ইনসাফের পরিপন্থী। (অর্থাৎ জ্ঞানী ও অজ্ঞানী যেমন সমান নয়, তেমনি পুণ্যবান ও পাপীও সমান নয়।)

রাতের ইবাদত ও আয়াতের শিক্ষা

যে ব্যক্তি রাতের নীরব পরিবেশে ঘুমের আরাম ত্যাগ করে সিজদাবস্থায় কিংবা দাঁড়িয়ে ইবাদত করে, সে প্রকৃত মুমিন। এমন ইবাদত বান্দাকে আখেরাতের ভয় এবং আল্লাহর রহমতের আশা দিয়ে প্রেরণা জোগায়।

মুমিনের হৃদয়ে আখেরাতের ভয় এবং আল্লাহর রহমতের আশা ভারসাম্য তৈরি করে। এটি তাকে ইবাদত ও সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করে। এমন ব্যক্তি তার দুনিয়ার কাজেও দায়িত্বশীল হয়।

আয়াতে জ্ঞানী ও অজ্ঞ ব্যক্তির তুলনা স্পষ্ট করা হয়েছে। যারা জ্ঞান রাখে তারা আল্লাহর আয়াতগুলো থেকে শিক্ষা নেয়। এ থেকেই বোঝা যায়, ইসলামে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব কতটা।

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গভীর রাতে ইবাদতের অসামান্য ফজিলত সম্পর্কে বলেছেন,

রাতের নামাজ তোমাদের পূর্ববর্তী নেককারদের প্রথা এবং তোমাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের মাধ্যম। এটি পাপ মোচন করে, গুনাহকে বাধা দেয় এবং দেহ থেকে রোগমুক্তি ঘটায়। (তিরমিজি)

রাতের ইবাদত অন্তরের শুদ্ধি আনে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ প্রশস্ত করে। এ ইবাদতের মাধ্যমে বান্দার আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটে। তাছাড়া, এটি জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং সৎপথে চলতে সহায়তা করে।

 ইবাদত এবং জ্ঞান ইসলামের দুই গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। গভীর রাতে ইবাদত যেমন বান্দাকে আল্লাহর কাছে প্রিয় করে তোলে, তেমনি জ্ঞান অর্জন তার জীবনে আলো ছড়ায়। আলোচ্য আয়াত আমাদের জীবনে রাতের ইবাদতের গুরুত্ব, আখেরাতের চিন্তা এবং জ্ঞানচর্চার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের উচিত রাতের ইবাদত বাড়ানো এবং জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে ইসলামের সঠিক বুঝ অর্জন করা। এভাবেই আমরা দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ের সফলতা লাভ করতে পারব।

Tags:   ইসলাম