রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে একের পর এক বিপদ লেগেই টাইগার পোষ্টার বয় সাকিব আল হাসানের জীবনে। জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে তিনি বিভিন্ন বিদেশি লিগে খেলে বেড়াচ্ছেন। এর মধ্যেই শুক্রবার তিনি শুনলেন আরও একটি দু:সংবাদ।
প্রশ্নবিদ্ধ বোলিং অ্যাকশনের জন্য শুক্রবার সাকিব আল হাসানকে নিষিদ্ধ করেছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। বাংলাদেশের এই বাঁহাতি স্পিনার ইসিবি আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতায় বোলিং করতে পারবেন না।
লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেয়ার পর এই ত্রুটি শনাক্ত হয়। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো।
ইংল্যান্ডের লাফবরো ইউনিভার্সিটির মেডিকেল বিভাগে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়েছিলেন সাকিব। গত ১০ ডিসেম্বর পরীক্ষার ফল হাতে পেয়েছে ইসিবি। বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞাও সে দিন থেকেই কার্যকর হয়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সারের হয়ে ম্যাচ খেলার পর তার অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন আম্পায়াররা।
সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাকিব কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সারের হয়ে একটি ম্যাচই খেলেন। সে ম্যাচে দুই ইনিংসে ৬৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে নেন ৯ উইকেট।
তবে সাকিবের অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার খবরটি সামনে আসে প্রায় এক মাস পর। এরপর গত ২ ডিসেম্বর অ্যাকশন পরীক্ষা দেন সাকিব, যেখানে ৪ ওভার বোলিং করেন তিনি।
তবে এখানেই শেষ নয়। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির সন্দেহজনক ও ত্রুটিপূর্ণ বোলিং নিয়ে একটি নীতিমালা আছে। সেই নীতিমালার ১১.৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘একটি জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন যদি একজন বোলারকে তাদের নিজস্ব নীতিমালার অধীনে ঘরোয়া ক্রিকেটে বোলিং নিষিদ্ধ করে এবং সেই নিষেধাজ্ঞা যদি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণী বিধি অনুযায়ী করা হয়, তাহলে সেই নিষেধাজ্ঞাকে আইসিসি আমলে নেবে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরোপ করবে।’
একই অনুচ্ছেদের আরও বলা হয়েছে, ‘অতিরিক্ত কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া সব জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন এবং তাদের অধীনস্থ ঘরোয়া ক্রিকেটেও একই নোটিশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। আইসিসি এবং জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশনগুলো সিদ্ধান্ত আরোপ ও কার্যকরের জন্য সব পদক্ষেপ বিধিসম্মতভাবে নেবে।’
যার অর্থ, আগামী দিনগুলোতে সাকিবকে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগে নাও দেখা যেতে পারে।
এদিকে এ মাসেই শুরু হতে যাওয়া বিপিএলে এবার সাকিবকে দলে নিয়েছে চিটাগং কিংস। বিপিএল খেলতে হলে সাকিবকে দেশে ফিরতে হবে। কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে দেশের মাটিতে তার শেষ টেস্ট খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। বিপিএলের আগে সেই নিরাপত্তা পরিস্থিতির কোনো উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই তার বিপিএলে খেলা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। তাই এক কথায় বলা যায় চরম দুর্দিনেই কাটছে সাকিব আল হাসানের জীবন।