• শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
logo

বাংলাদেশের নিঃস্বার্থ বন্ধু র্জজ হ্যারিসন

সুদীপ্ত সাইদ খান ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ০২:৫৮ পিএম

র্জজ হ্যারিসন যার নাম শুনলইে মনে পড়ে যায় ১৯৭১ সালের কনসার্ট ফর বাংলাদেশের কথা। আর কনসার্ট ফর বাংলাদেশের নাম শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। এটি একটি চ্যারিটি প্রোগ্রাম।

র্জজ হ্যারিসন যার নাম শুনলইে মনে পড়ে যায় ১৯৭১ সালের কনসার্ট ফর বাংলাদেশের কথা। আর কনসার্ট ফর বাংলাদেশের নাম শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। এটি একটি চ্যারিটি প্রোগ্রাম। যার মাধ্যমে বিশ্ব জানতে পেরেছিল নির্যাতিত, নিপীড়িত বাঙালির কথা। পাকিস্তান র্কতৃক অন্যায়, অবিচারের কথা। তাদের হত্যাযজ্ঞের কথা। তাৎকালীন মিডিয়ার বহুল প্রচার ছিল না। ছিল না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাই বিশ্বের কাছে বাংলার দুর্দশা আড়ালেই থেকে যাচ্ছিল। বিশ্বের গণমাধ্যমে হানাদার বাহিনীর অরাজকতা আর গণহত্যার খবর প্রচার হলেও তা ছিল অপ্রতুল। দুঃখজনক হলো যে চীন, আমেরিকার মতো রাষ্ট্র এই মুক্তিযুদ্ধকে সমার্থন করেনি। ১৯৭১’র আগস্টে সইে আমেরিকার নিউইয়র্কের মাটিতে বিশ্বের নামীদামী সঙ্গীতশিল্পী মিলিত হয়ে আয়োজন করনে চ্যারিটি শো ‘কনর্সাট ফর বাংলাদেশ’। কনসার্টের মূল উদ্যোক্তা পতি রবিশঙ্কর মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিশ্বজনমত গড়ে তোলা এবং শরণার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য শিল্পী জর্জ হ্যারিসনকে নিয়ে এই অব স্মিরণীয় কনর্সাটরে আয়োজন করছেলিনে। 

তিনি মূলত কথা বলেন, পপ সঙ্গীতের সুপরিচিত ব্যান্ড বিটলসের অন্যতম সদস্য জর্জ হ্যারিসনের সঙ্গে এবং তিনি সম্মত হওয়ার পরে নিজেই যোগাযোগ করেন আরও শিল্পীদের সঙ্গে। জর্জ হ্যারিসন ও তার মানবতাবাদী গায়ক বন্ধুরা গানে গানে বাঙালীদের ওপর চলা নির্মম অত্যাচারের কথা বিশ্ববাসীকে শুনিয়েছিলেন। কনসার্ট ফর বাংলাদশে শুধু আর্থিক সহযোগিতায় সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং বাংলাদেশের অস্তিত্বের কথা, চলমান গণহত্যার কথা, দেশান্তরী শরণার্থীর কথা সারাবিশ্বকে জানিয়েছিলেন তারা।

’৭১-এর পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের দৃশ্য জর্জ হ্যারিসনকে বেদনাতুর করে তুলেছিল। তিনি বাংলাদেশের নির্যাতিত মানুষের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন। আমেরিকার মাটিতে ঘটে যাওয়া এই কনর্সাট হতে সংগৃহীত ২,৫০,০০০ মার্কিন ডলার বাংলাদেশের উদ্বাস্তুদের জন্য দেয়া হয়েছিল। কনসার্টে জর্জ হ্যারিসন তার নিজের লেখা বিখ্যাত সেই মর্মস্পর্শী বাংলাদেশ বাংলাদেশ গান পরিবেশন করেন। গানের মূল কথাই ছিল বিশ্বের মানুষের কাছে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান। গানের সুরে মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন মানুষ মানুষের জন্য। জর্জ হ্যারিসন পুরো গানটা উচ্চৈস্বরে, করুণ বিলাপের সুরে, গভীর মানবিক ও বিপ্লবী আবেদন নিয়ে গেয়েছিলেন। দর্শক-শ্রোতা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে আবেগে অশ্রুসিক্ত হয়েছিল। 

জর্জ হ্যারিসনের প্রয়াণ দিবসে এক নজরে জেনে নেওয়া যাক তার সম্পর্কে,

জর্জ হ্যারিসন। বিংশ শতাব্দীর অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন জনপ্রিয় গায়ক এবং গিটারিস্ট। যার জন্ম ২৫ ফব্রেুয়ারি ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডের লিভারপুলে। তিনি জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। 

১৯৬৬ সালে ব্রিটিশ মডেল ও ফটোগ্রাফার প্যাট্রিসিয়া অ্যান বয়েডেক বিয়ে করেন জর্জ হ্যারিসন। এর পর এক দশকের বেশি সময়ের দাম্পত্য জীবন শেষ হয় ১৯৭৭ সালে বিয়েবিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে। 

এর পর তিনি আমেরিকার বিখ্যাত দার্শনিক, লেখিকা, ফিল্ম পরিচালিকা অলিভিয়াকে বিয়ে করেন। জর্জ হ্যারিসন মারা যান ২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর, ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। প্রয়াণ দিবেস টিএনটোয়েন্টিফোরের কীর্তিমান বিভাগ এই গুণী শিল্পীকে জানাচ্ছে গভীর শ্রদ্ধা।