জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে উঠা আন্দোলনের মুখে প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।
ধর্ষণের দায় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকেও নিতে হবে- নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের এমন দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যেই সোমবার বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক আদেশে তার পদত্যাগের তথ্য জানানো হয়।
পাশাপাশি নতুন প্রক্টরও নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আদেশে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফিরোজ উল হাসানের লিখিত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে এবং তাকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের বোটানিক্যাল গার্ডেনে গৃহবধূকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণের’ ঘটনায় নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ তাদের আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সবশেষ প্রশাসনিক ভবন অবরোধের কর্মসূচি চালিয়ে আসছিল।
টানা তিন কর্মদিবস অবরোধের পর ১৩ মার্চ উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরা ‘প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ কিংবা প্রশাসনের অব্যাহতি’র আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করে। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে ১৮ মার্চ (সোমবার) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
এর মধ্যেই এদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম। তিনি লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে ঘোষণা দেন, “প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দুয়েকটি পদে পরিবর্তন আসতে পারে।”
কোন পদে পরিবর্তন আসতে পারে জানতে চাইলে উপাচার্য তখন বলেন, “বিকালের মধ্যে সেটা জানা যাবে।”
এরপরই বিকাল ৩টার প্রক্টরের পদত্যাগ ও নতুন প্রক্টরের নিয়োগের আদেশ আসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
প্রক্টরের পদত্যাগের পর হল প্রাধ্যক্ষের ‘দায়’ও সামনে এনেছেন নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান দাবিগুলোর একটি ছিল মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া। ৩ ফেব্রুয়ারির ধর্ষণের ঘটনায় এতদিন পর্যন্ত কেউ কোনও দায় নেয়নি কিন্তু আমরা ওই হলের প্রাধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের দায় নেওয়াটা সঙ্গত মনে করেছি। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একজনকে (প্রক্টর) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।