সিরিয়ার পালমিরা শহরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫০ জন।
সিরীয় এই শহরের আবাসিক বিভিন্ন ভবন ও শিল্প এলাকায় চালানো হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। বুধবার (২০ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার মধ্যঞ্চলীয় শহর পালমিরায় আবাসিক ভবন এবং একটি শিল্প এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত এবং আরও ৫০ জন আহত হয়েছেন।
দেশটির নিউজ এজেন্সি সানা একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো দুপুর দেড়টার দিকে জর্ডান সীমান্তের দিক থেকে এসে আক্রমণ করে এবং এই হামলার ফলে উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অবশ্য যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক একটি পর্যবেক্ষক গ্রুপ ভয়াবহ এই হামলায় মৃতের সংখ্যা ৪১ বলে জানিয়েছে এবং বলেছে, ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া যোদ্ধাদের পরিবার অধ্যুষিত অঞ্চলে ও এর আশপাশে একটি অস্ত্রের ডিপো এবং অন্যান্য স্থানকে লক্ষ্য করে এসব হামলা হয়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা হামলা সম্পর্কে বিদেশি মিডিয়ার প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করবে না।
বিবিসি বলছে, বুধবারের হামলার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও ও ছবিতে পালমিরা এলাকা থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ গ্রুপ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) তাদের সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো শহরের তিনটি স্থানে হামলা করেছে।
এসওএইচআর জানিয়েছে, হামলায় ২২ বিদেশি নাগরিক এবং সাত সিরীয়সহ ৪১ জন নিহত হয়েছেন এবং আহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন সাতজন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার মতে, ওই হামলায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা সশস্ত্র গ্রুপ প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদের “সন্ত্রাসী অবকাঠামো সাইট এবং কমান্ড সেন্টার” আক্রমণ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে শত শত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বাহিনীর এসব হামলায় প্রধান লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর যোদ্ধা ও সিরীয় সেনাবাহিনীকে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে আঞ্চলিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সেসময় থেকেই এই ধরনের ইসরায়েলি হামলাগুলো বেড়েছে।