টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচাকে প্রকাশ্যে হত্যা করলো তার ভাজিতা। এ হত্যাকাণ্ডে তিনদিন অতিবাহিত হলেও জড়িতদের কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি ধনবাড়ী থানা-পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালী হওয়ায় তার বাড়ি-ঘর মালামাল ও গবাদি পশু রক্ষায় পাহারা দিচ্ছে গ্রাম-পুলিশ সদস্যরা। এদিকে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে চলছে শোকের মাতম। আসামি গ্রেপ্তরের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।
নিহত ব্যক্তির নাম জামাল মন্ডল (৪৫)। সে তিন সন্তানেরজনক। জামাল মন্ডল উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামের মৃত ছাত্তার মন্ডলের ছেলে। আভিযুক্ত আসামিরা হলেন- জামাল মন্ডলের ভাতিজা মামুন মন্ডল, মাসুদ মিয়া, মাহফুজ আহমেদ, মামুনের স্ত্রী কমলা বেগম গং। গত শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১০টায় এ হত্যাকাণ্ডে ঘটনা ঘটে।
নিহতের স্ত্রী মাকছুদা বেগম, ছেলে ইয়ামিন ইসলাম, ভাগ্নে মামসুদ রানা ও আফজাল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের রাস্তা নিয়ে মামুনদের সাথে বিরোধ। বিষয়টি সমাধানে কয়েকবার শালিসী বৈঠক বসায় এলাকাবাসী। কিন্তু কোনোভাবেই সুরাহা হয়নি। মামুন ক্ষমতার জোর দেখায়। ঈদের দিন বাড়ির পাশের দোকান থেকে বাড়িতে ফেরার পথে ওরা সবাই মিলে অতর্কিত হামলা করে কাঠের টুকরো দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরই এক পর্যায়ে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলিয়ে তার মৃত্যৃ নিশ্চিত করে। তাকে হত্যা করে আমাদের-কেও হত্যার হুমকী দিচ্ছে। আমরা এখন নিরাপত্তহীনতায় ভুগছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মাছুদ রানা, আমিনুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম ও মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলীসহ এলাকাবাসীরা বিডি নিউজ বুককে বলেন, ‘দিনে-দুপুরে একজন নীরিহ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করলো। সেই খুনির বাড়ির মালামাল ও গরু-বাছুর হেফাজত করতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম-পুলিশ মোতায়েন করেছে। জামালের হত্যাকারী মামুন, মাসুদ, মাহফুজ গংদের গ্রেপ্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।’
বাড়ি পাহারায় দায়িত্বে থাকা দুই গ্রাম-পুলিশ ভীম ও গণেশ¬ বিডি নিউজ বুককে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত মানুনের বাড়িতে কোনো ধরণের বিশৃংখলা না ঘটে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে গত তিনদিন ডিউটি করছি। তার কয়েটি গরু আছে এগুলোকে খাবার দিচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে যদুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর ফিরোজ আহমেদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বিডি নিউজ বুককে বলেন, ‘এ পরিকল্পিত হত্যা। এর বিচার দাবি করি।’
ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচএম জসিম উদ্দিন এ ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বিডি নিউজ বুককে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তিনি আরও বলেন, বিবাদীদের বাড়িতে যেন পরবর্তীতে কোনো প্রকার হামলা না ঘটে এজন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মীর ফিরোজ আহম্মেদ বাড়িঘর ও গরু পাহারায় গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করেছে। সেই সাথে থানা-পুলিশ এলাকায় টহল দিচ্ছে।’