রমজানে চোখের যত্নে যা করবেন
রোজাদার যখন অসুস্থ থাকেন, তখন ভিন্ন এক বাস্তবতার সম্মুখীন হন। যেমন- তাকে ওষুধ সেবন করতে হবে। জরুরি অপারেশনে যেতে হচ্ছে অথবা নিতে হচ্ছে কোনো ইনজেকশন। কি করবেন একজন রোজাদার? অবশ্যই তাকে চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
যাদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, তারা নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন। চোখের রোগের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শসহ দুটি বিষয় বিবেচনায় আনতে হয়। অসুস্থ মানুষের জন্য রোজার মাসে কিছু শিথিলতা আছে। সোজা কথায় বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রোজা ভাঙার বিধান আছে, যা পরবর্তী সময় করে নিতে হয়। তাই পানাহার ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি- এ দুটি বিষয় গুরুত্বের বিবেচনায় রাখতে হয়।
রোজাদার যখন অসুস্থ থাকেন, তখন ভিন্ন এক বাস্তবতার সম্মুখীন হন। যেমন- তাকে ওষুধ সেবন করতে হবে। জরুরি অপারেশনে যেতে হচ্ছে অথবা নিতে হচ্ছে কোনো ইনজেকশন। কি করবেন একজন রোজাদার? অবশ্যই তাকে চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। যেমন- রোজা আদৌ ভাঙে কিনা এবং ভঙ্গ হলে অত্যাবশ্যকীয় কিনা। অর্থাৎ পরবর্তী সময় একটার বদলে একটা রোজা করে নেওয়া যাবে কি না।
আরেকটি বিষয় হলো রোজা ভঙ্গ না হলেও ত্রুটিযুক্ত হবে কিনা? এ বিষয়গুলো যে কারণে জানা জরুরি, তা জেনে নিন
ওষুধ ব্যবহার : রোজার দিনে চোখে ড্রপ ব্যবহার করলে রোজা ভঙ্গ হবে কি না বা রোজা ক্ষতিগ্রস্ত বা মাকরু হবে কিনা? কারণ, চোখে ড্রপ দিলে গলায় যায়। অনেকেই মনে করতে পারেন, এতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। চোখের ড্রপে যেহেতু খাদ্য উপাদান নেই, তাই বিষয়টি পানাহারের মধ্যে পড়বে না। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, এতে রোজা ভঙ্গ না হলেও ত্রুটিপূর্ণ বা মাকরু হবে কিনা? এখানে কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে- চোখে ড্রপ ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয় কিনা? রোজা থাকা অবস্থায় ড্রপ দেওয়া পরিহার করা যায় কিনা? কারণ, অনেক ড্রপ আছে, দিনে একবেলা বা দুবেলা দিলেই হয়। যদি সুযোগ থাকে, তবে রোজা থাকা অবস্থায় ড্রপ পরিহার করা উত্তম। তবে চেষ্টার কমতি রাখা যাবে না।
ইনজেকশন : খাদ্যোপাদান হলে সে ইনজেকশন নেওয়া যাবে না। যদি খাদ্যোপাদান না থাকে, যেমন- অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যাভাস্টিন জাতীয় ইনজেকশন দিলে রোজা ভঙ্গ হবে না। যদি এমন হয়, তাৎক্ষণিকভাবে ইনজেকশন না দিলে চোখ অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, তবে এমনভাবে দিতে হবে, যেন রক্তক্ষরণ না হয় অথবা রোজা ভেঙে পরবর্তীকালে রোজাটি করে নিতে হবে। পরীক্ষার প্রয়োজনে ইনজেকশন দিতে হলে, যেমন- চোখের ফান্ডাস ফ্লোরেসেন্স এনজিওগ্রাম করতে হলে এক ধরনের ডাই রক্তনালীতে পুশ করতে হয়। যদিও এতে কোনো খাদ্যোপাদান নেই, তবু দিনের বেলা না করাই উত্তম। শিরায় ইনজেকশন পুশ করার সময় রক্তক্ষরণের ঝুঁকি থাকে। তা ছাড়া অনেক সময় উক্ত ডাইয়ের হাইপার সেনসিটিভিটি রিয়েকশন প্রতিরোধে একাধিক ইনজেকশন এমনকি খাদ্যোপাদান সংবলিত স্যালাইন দেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোজা ভঙ্গ হবে।
অপারেশনের প্রয়োজনে যা করণীয় : চোখের অনেক অপারেশন আছে, যেখানে রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে শরীরের ভেতরের জলীয় অংশ এবং অন্যান্য টিস্যু শরীর থেকে যেহেতু বের হয়ে আসে, তাই এতে রোজা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জরুরি অপারেশন, যেমন- ফেকোলাইটিক গ্লুকোমা বা কোনো ইনজুরির ঘটনা হলে রোজা ভেঙ্গে পরবর্তীকালে রোজাটি করে নিতে হবে। কর্নিয়া সংযোজন একটি বিশেষ ধরনের অপারেশন। অনেক সময় কর্নিয়াপ্রাপ্তির ৬ ঘণ্টার মধ্যে অপারেশন করতে হয়। নইলে কর্নিয়ার গুণ নষ্ট হয়ে যায়। এ অপারেশনটি জরুরি বলে গণ্য করা যায়। তাই চোখের যেকোনো সমস্যাই অবহেলার না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা ভালো।
Tags: