টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পৌরশহরের কেন্দুয়া সড়ক। সড়কটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। নানা অব্যবস্থাপনায় সড়কটিতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে হাজারো জনসাধারণ। সড়ক দখল করে ভারী গাড়ি দাঁড় করিয়ে মালামাল ওঠা-নামা করায় এ ভোগান্তি।
দুই মিনিটের সড়ক পাড়ি দিতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে লম্বা যানজটের। এ কারণে জনসাধারণ অতিষ্ঠ।
জনসাধারণের অভিযোগ, বাসটার্মিনাল ও ট্রাাফিক পুলিশ না থাকা এবং নানা অব্যবস্থাপনার কারণে পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রেই যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রতিনিয়তই লম্বা হচ্ছে এ যানজট। সাথে ব্যাটারিচালিত অটোজট রয়েছেই। এছাড়া সড়কে দিনভর ট্রাক ও কাভার্ট ভ্যান রেখে মালামাল খালাস ও ফুটপাত দখল এর অন্যতম কারণ। সবাইকে পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে জরুরি সেবার গাড়িও।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কে ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কেন্দুয়া সড়ক। সড়কের পাশে ১৫ থেকে ২০টি সবজি ও ধানের আড়ত। এছাড়াও রয়েছে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত কয়েকটি ক্লিনিক, হোটেলসহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাঁরাও ফুটপাত দখল করে রেখেছে। আড়ত মালিকেরা সড়কে ট্রাক ও কাভার্ট ভ্যান রেখে দিনভর খালাস করছেন মালামাল। এতে আরও লম্বা হচ্ছে যানজট। বিপাকে পড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ অনেকে। অন্যদিকে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তব্যরত পুলিশ।
পথচারী করিব হোসেন ও রাজু মিয়া বলেন, ‘এ সড়কের প্রত্যেকটা দোকানের সামনে ট্রাক ও কাভার্ট ভ্যান দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো নজড়দাড়ি না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সবাই।’
সাকিনা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তন্নী আক্তার ও সুমাইয়া জাহান বলেন, ‘এ যটের কারণে আমরা সময় মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারি না। শিক্ষপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছতে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি লেগে যায়। এ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে ট্রাক ও কাঁচামালের আড়ত দ্রুত সরিয়ে নিতে দাবি জানাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের ও রহমত আলী বলেন, ‘এ সড়কে ট্রাক ও কাভার্ট ভ্যান দাঁড় করিয়ে আড়ত মালিকরা মালামাল খালাস করে। এছাড়াও সকালে কাঁচামালের আড়তে বেচা-কেনা চলায় চলাচল করা খুবই কষ্টদায়ক। ২ মিনিটের সড়ক পাড়ি দিতে ৩০ মিনিট লাগে। কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া প্রয়োজন।’
সড়কে ট্রাক রেখে মালামাল ওঠা-নামার বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দুয়া সড়কের মেসার্স রিতু এন্টাইপ্রাইজের মালিক আজহার আলী বিডি নিউজ বুক টোয়েন্টিফোর ডট নেটকে বলেন, ‘ট্রাকে লোড/আনলোড করতে সময় লাগে মাত্র ৩৫ মিনিট। সামান্য এ ভোগান্তি কিছু নয়। আমি শুধু একাই না, সব ব্যবসায়রাই এ কাজ করছে বলে দাবি তাঁর।’
ধনবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল হাইয়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কোনো কথা শোনেন না। অনেকবার তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
পৌর মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল বিডি নিউজ বুক টোয়েন্টিফোর ডট নেটকে বলেন, ‘দোকান মালিকদের কঠোরভাবে সতর্ক করা সত্তে¡ও তাঁরা মালামাল খালাস করে। ফুটপাত উদ্ধার ও জনসাধারণে ভোগান্তি দূর করতে কাজ শুরু হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসলাম হোসাইন বিডি নিউজ বুক টোয়েন্টিফোর ডট নেটকে বলেন, ‘এ সড়কে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে মালামাল লোড/আনলেডের কারণে কিছুদিন পূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় চালক ও আড়ত মালিকদের অর্থদÐ করে সতর্ক করা হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করা হবে।