• বৃহস্পতিবার ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
logo

চাকরিচ্যুত সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম "সহযোদ্ধা"র সংবাদ সম্মেলন

টিএন২৪ প্রতিবেদক ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:৫৩ এএম

চাকরিচ্যুত সদস্যদের আবেদন তুলে ধরতে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর চাকরিচুত্য সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম "সহযোদ্ধা"র পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

চাকরিচ্যুত সদস্যদের আবেদন তুলে ধরতে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর চাকরিচুত্য সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম "সহযোদ্ধা"র পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এ  সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর চাকরিচুত্য কর্পোরাল মোহাম্মদ কুরবান আলী বলেন, আমি সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর চাকরিচুত্য সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম "সহযোদ্ধা"র পক্ষে ২০০৯ হতে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের মধ্যবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের শাসনামলে আওয়ামী দুসর ব্যক্তিদের রোষানলের শিকার হয়ে চাকুরীচুত্য সদস্যদের আর্তনাদ ও মানবিক আবেদনগুলো তুলে ধরছি ইলেকট্রিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে।

তিনি বলেন, প্রথমেই সেনা নৌ ও বিমান বাহিনী থেকে চাকরিচুত্য সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম "সহযোদ্ধা" এর পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক ২০২৪ সালের আগস্টে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের শোষণের থাবা থেকে ৫ আগস্ট একটি নতুন বাংলাদেশ উন্মোচন করতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সকল শহীদ এবং আহত বীরযোদ্ধাদের প্রতি  শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও সশস্ত্র বাহিনী অন্তর্ভুক্ত সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান স্যারদের প্রতি সশস্ত্র শ্রদ্ধা ও সন্মান রেখে আমরা সশস্ত্র বাহিনী থেকে অবিচারের (ইনজাস্টিস) (injustice) মাধ্যমে তথাকথিত গণতন্ত্র লুন্ঠনকারী স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের শাসনামলে চাকরিচুত্য সেনা নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যবৃন্দ। আজ আমরা বৈষম্য, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অবিচার ও আওয়ামী সরকারের দুসরদের রোষানলে জ্বলেপুড়ে খাক। আমরা বিশ্বাস করি আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গণতন্ত্র ও অভ্যুদয় হয়েছে ফ্যাসিস্ট মুক্ত নতুন স্বাধীন এক বাংলাদেশের। আমরা প্রত্যাশা করছি আজকের এই গণতন্ত্রের বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী থেকে অন্যায ভাবে চাকরিচুত্য সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্মের সকল সদস্যদের চাকরিচুত্যকালীন সময় থেকে এখন পর্যন্ত সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান পূর্বক চাকরিতে পুনর্বহাল করবেন। গত ২১ আগষ্ট-২৪ইং তারিখে সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠিত হওযার পর থেকে আমরা যেভাবে রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের নিকট মানবিক আবেদন করেছি তা পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো..

গত ২৭/০৮/২৪ইং তারিখে সুশৃঙ্খলভাবে নিয়মানুযায়ী তিন দফা দাবি নিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, আইন বিচার ও সংসদ বিষষক উপদেষ্টা, ডাক-টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা এবংসেনাপ্রধান স্যার বরাবর চিঠি প্রদান করেছি।

গত ৫/০৯/২৪ই তারিখে ৩দফা দাবি সম্বলিত আবেদন ও চাকরিচুত সদস্যদের নামীয় তালিকাসহ একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর (যা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে গ্রহণ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাফিজুর রহমান)।

গত ০৮/০৯/২৪ইং তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ৩দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করি (যা দেশ টিভিসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়।

গত ১৫/০৯/২৪ইং তারিখে ৩দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে প্রায় ৩৫০ জন সদস্যের উপস্থিতিতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আবারও চাকরিচুত্যদের নামীয় ভালিকাসহ আরও একটি স্মারকলিপি প্রদান করি (যা প্রধান উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব মো. সাব্বির আহমদ স্যার মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে গ্রহণ করেন)।

গত ০৫/১০/২৪ইং তারিখে ৩দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশৃংখলভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছি। এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান

গত ০৯/১০/২৪ইং তারিখে আবারও ৪ শতাধীক সদস্যের উপস্থিতিতে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়মে ৩ দফা দাবিতে সুশৃংখলভাবে সংবাদ সম্মেলন করি (যা নিউজ টুয়েন্টিফোর, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হয়)।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয আজকের এই বৈষম্য মুক্ত গণতন্ত্রের মানবিক বাংলাদেশে আমাদের আর্তনাদ আহাজারি কেউ শুনেনা। কেউ শোনেনি।

উপরন্তু গত ০৯/১১/২০২৪ ইং তারিখ রাতে সহযোদ্ধা প্লাটফর্মের নিপীড়িত নিষ্পেষিত মজলুমদের সুশৃংখল ন্যায় দাবি আদাযের প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করতেই ডিজিএফআই সহ যৌথ বাহিনী মিলে সহযোদ্ধা প্লাটফর্মের সদস্য- সেনা বাহিনীর চাকরিচুত্য সৈনিক মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান, নৌ বাহিনীর পেটি অফিসার মোঃ আব্দুল হাকিম নৌ বাহিনীর এলপিএম মোঃ সাব্বির আহমেদ সেনা বাহিনীর সৈনিক মো: আশরাফুল হাসানসহ ছয় সদস্যকে কোনো কারণ ছাড়াই উদ্দেশ্য প্রণীতভাবে তুলে নিয়ে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে অমানবিকতার নজির স্থাপন করেন।

গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা ও বৈষম্যমুক্ত আজকের বাংলাদেশের স্বতন্ত্র ও মানবিক আভিভাবক

প্রধান উপদেষ্টাসহ রাষ্ট্রের কর্তা ব্যক্তিদের প্রতি আমাদের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আসুন, খবর নিয়ে দেখুন আমরা কটা দুস্থ অসহায় মানবেতর জীবন যাপন করছি স্ত্রী সন্তান পরিবার-পরিজন নিয়ে। সামাজিকভাবে আমরা কতটা প্রহসনের শিকার।

চাকরিচুত্য হওয়ার কারন হিসেবে তিনি বলেন, ১৮৫৭ সালের বৃটিশ আমলের আইনের আলোকে তাদেরকে চাকরিচুত্য করা হয়েছে।

স্ত্রী কর্তৃক অভিযোগে। পারিবারিক কলহ, বহিরাগত মেয়ে কর্তৃক অভিযোগের ভিত্তিতে চাকরিচুত্য করা হয়েছে।

কোনো প্রকার ভোগটেষ্ট ব্যতিত মাদক সেবনের দায়ে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

পুলিশ কর্তৃক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে আকস্মিকভাবে মাদক মামলা হওয়ায় কতিপয় সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা চাকরিচ্যুত করে। যদিও পরবর্তীতে ওই মামলা থেকে নির্দোষ প্রমাণ হয় ওই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য।

আওয়ামী সরকারের শাসনামলে বিরোধী দলের রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে চাকরিচুত্য করা হয়েছে।

ইন্টারনাল গোয়েন্দা কর্তৃক টর্চার সেলে আটক করে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

কর্মকর্তা কর্তৃক জোরপূর্বক ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস আটক কার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ফেলে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

চেইন অব কমান্ড মেনে সিনিয়রের অনুমতি সাপেক্ষে আওয়ামী সরকারের শাসনামলে ঘোষিত পে-স্কেলে বেতন বৈষম্যের বিষয় তুলে ধরায় চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

চাকরিচুত্য সদস্যদের প্লাটফর্ম "সহযোদ্ধা" পক্ষ থেকে তুলে ধরছি সেনা নৌ বিমান, বাহিনীর দাবী সমুহ:

১. চাকরিচ্যুত কালিন সময় থেকে অদ্যাবধি সমস্ত বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সহ চাকুরীতে পুনর্বাহাল।

২. যদি চাকরিচুত্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা সম্ভব না হয় তাহলে উক্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সরকারি সকল সুযোগ সুবিধাসহ সম্পূর্ণ পেনশনের আওতাভুক্ত করা।

৩. যে আইন কাঠামো ও একতরফা বিচার ব্যবস্থার প্রয়োগে শতশত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের চাকুরীচুত্য করা হযেছে। সেই আইন কাঠামো ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। (ব্রিটিশ আইন সংস্কার করতে হবে)।

Tags:   খবর