মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা নয়, দায়িত্ব নিয়েছে। নির্বাচিত হয়ে যারা সরকার গঠন করবে তারা যেন ক্ষমতা নয় বরং দায়িত্ব পালন করে এধরণের বার্তা রাজনৈতিক দলগুলোকে দিতে হবে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গণ-আকাঙ্ক্ষা মঞ্চের উদ্যোগে "গণ-আকাঙ্ক্ষা, গণ-অভ্যুত্থান প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি এবং বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা"-শীর্ষক মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেছেন।
মানুষে-মানুষে সম্প্রীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা ফরিদা বলেন, ধর্মীয় পরিচয়ে বিভাজন করা এটা মোটেও কাম্য নয়-আমাদের দরকার মানুষের পরিচয়। আমাদের সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন হচ্ছে এই কথা বলে কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদেরকে ভয় পাই না। কারণ আমরা যে পরিবর্তন আনতে চেয়েছি, সেই পরিবর্তন আমাদের সন্তানেরা করেছে। ভারতও আমাদের সেই গণঅভ্যুত্থান ঠেকাতে পারেনি। তাদের এই প্রোপাগান্ডাকে বাংলাদেশ ভয় পায় না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সন্তানরা গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করেছে, যা কোন রাজনৈতিক দল করতে পারেনি। এসময় উপদেষ্টা শুধু বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা জানান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কৃষি খাতকে আরও সম্প্রসারণ করা হবে। পণ্য আমদানি করেই নয়, পণ্যের উৎপাদনও বাড়াতে হবে। শুধু কৃষি পণ্য নয় কৃষকদেরও পরিসংখ্যানে অর্ন্তভূক্ত করার আহ্বান জানান। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা শুধু সেনাবাহিনীর কাজ নয়, আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জুলাই-আগস্টে শহীদদের মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের প্রতি অন্যায়-অবিচার হোক সরকার তা কোনভাবেই চাইবেনা। আপনাদের সন্তানের রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এখনও অনেক আহতরা শহীদে পরিণত হচ্ছে, শহীদদের তালিকা বাড়ছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বক্তারা ছাত্র-শ্রমিক-জনতা-কৃষকদের অধিকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, সংবিধান সংস্কার বা সংবিধান পুনর্লিখন হোক-তা যেন জনগণের জন্য হয়। এমন সংবিধান হতে হবে যেখানে দেশের মানুষের সাম্য ও মর্যাদার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
গণ-আকাঙ্ক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তরের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক এ্যাড. হাসনাত কাইয়ূম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.সামিনা লুৎফা, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.গোলাম সারওয়ার। এছাড়া ছাত্র-শ্রমিক-জনতা-কৃষক প্রতিনিধি এসময় উপস্থিত ছিলেন।