ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে হচ্ছে বাংলা নববর্ষ-১৪৩০। ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে বিভেদ ভুলে সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে বাঙালির সর্বজনীন এ উৎসব পহেলা বৈশাখ।
আজ শুক্রবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষবরণ।
সকাল ১০টায় গ্রামীণ ঐতিহ্য তুলে ধরে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, সাংবদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ অংশ নেওয়া বিভিন্ন বয়সী মানুষ। উচ্ছ্বাস আর বাহারি পোশাক পরিধান, নাচ-গান, হইহুল্লোড়ে তৈরি হয় অন্যরকম আমেজ। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়।
এদিকে, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসেডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি তার সংসদীয় আসনের সর্বস্তরের জণগনকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
অপরদিকে, দিনটিকে ঘিরে ধনবাড়ী নওয়াব ইনস্টিটিউশন মাঠে আবহমান বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। চৈত্র বৈশাখ মাস এলেই ধনবাড়ীর মেলাকে কেন্দ্র করে ধুমধাম পড়ে যায়।
ধনবাড়ীর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ব্রিটিশ সরকারের নিকট বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ১ম উত্থাপন করে ছিলেন। বাংলার প্রতি অঘাত ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ তিনি সেই ১৯২১ সালে বাংলা নববর্ষে ১লা বৈশাখে বৈশাখী মেলার সূচনা করেন। মেলার রূপকে প্রসারিত করার জন্য ১লা বৈশাখে পণ্যের উৎসব চালু করেন।
উৎসবের সময় আগত লোকদের নবাববাড়ীর পক্ষ থেকে বিশাল আয়োজনে খাওয়ানো হত। এ মেলার সময় পরবী দেওয়ার প্রথা নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী প্রবর্তন করেন। এ প্রথা ধনবাড়ী এলাকায় এখনও প্রচলন আছে। মেলার সময় রাজকোষ থেকে রাজ কর্মচারীদের বিশেষ ভাতা দেওয়া হত। যাতে রাজ কর্মচারীরা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ ভরে বৈশাখী মেলা উদযাপন করতে পারেন। এ মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল লাঠি খেলা।
এছাড়াও__ বাঁশ, বেত, মাটির বিভিন্ন হস্তশিল্প, কুটিরশিল্প, ম্যাজিক ও পালাগান এ মেলার আকর্ষণ। এলাকার লোকজনের পহেলা বৈশাখ দিনটি আনন্দেই কেটে। আজ অবধি সেই মেলা চলে আসছে। মেলার সৌন্দর্য ও আঙ্গিক বেড়ে যাওয়ায় এই বৈশাখী মেলা একদিনের পরিবর্তে এখন তিন দিন করা হয়েছে।