দানের বিপরীতে ধার্য করা প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা আয়কর চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাঠানো নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা পৃথক তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলার বিষয়ে রায় ঘোষণা করা হবে আজ।
বুধবার (৩১ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে দানের বিপরীতে ধার্য করা প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা আয়কর চেয়ে এনবিআরের পাঠানো নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা পৃথক তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলার শুনানি শেষ হয়। এরপর এনবিআরের ওই নোটিশগুলোর বৈধতা নিয়ে রায়ের জন্য ৩১ মে দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৩ মে) সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেন। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন। ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান।
রায়ের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (ড. ইউনূস) বলেছেন, টাকা দান করেছেন। তাই কর অব্যাহতি পাবেন। আর আমরা বলেছি, কর অব্যাহতির যেসব কারণ উল্লেখ করা আছে, সেগুলোর মধ্যে তারটা পড়ে না। এজন্য তাকে দানকর দিতে হবে। আদালত শুনেছেন। আগামী ৩১ মে রায়ের দিন ঠিক করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ পাঠায় এনবিআর।
২০১২-১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার টাকা দানকর দাবি করা হয়। আর ২০১৩-১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেয় এনবিআর।
দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের এসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ড. ইউনূস। বাদীর দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এ কর দাবি করতে পারে না।
এরপর ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর ইউনূসের আবেদন খারিজ করেন আদালত। ২০১৫ সালে তিনি হাইকোর্টে তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা (রিট আবেদন) করেন।
ওই মামলাগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায়ের জন্য আগামী ৩১ মে দিন ঠিক করা হয়।