পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কপ২৯-এ ‘উচ্চপর্যায়ের অভিযোজন অর্থায়ন সংলাপ’-এ বাংলাদেশের পক্ষে অভিযোজন তহবিল বৃদ্ধির দাবি জানান।
বাকুর মিটিং রুম-১১-তে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে তিনি অভিযোজন তহবিল জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তির (ইউএনএফসিসিসি) গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ)-এর মতো পদ্ধতিতে চ্যানেল করার এবং অভিযোজন ও প্রশমন তহবিলের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, “জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য বিশেষ অভিযোজন তহবিল বরাদ্দের মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের সুরক্ষা ও টেকসই সক্ষমতা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।” তিনি জাতীয় সংস্থাগুলোর জন্য তহবিল প্রাপ্তি সহজ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং বাজারভিত্তিক ঋণের ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধির কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণভার বাড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি)-তে প্রতিবছর অভিযোজনের জন্য প্রয়োজন ৮.৫ বিলিয়ন ডলার। অথচ, গত দুই দশকে অভিযোজন তহবিল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তহবিল (এলডিসিএফ) মিলে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে, যা ১৬০টি দেশের জন্য সম্পূর্ণ অপ্রতুল। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের মধ্যে অভিযোজন তহবিল দ্বিগুণ করার প্রস্তাব স্বচ্ছতার অভাবে ভুগছে এবং বাস্তব চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ।
উপদেষ্টা জানান, বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বারবার জলবায়ু-জনিত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। গত ১৮ মাসে দেশটি ১৫টি জলবায়ু-প্রভাবিত দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে। ২০২৪ সালে দুইটি ভয়াবহ বন্যায় ১.৭ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয় এবং জাতীয় বাজেটের ১.৮% খরচ হয়। বর্তমানে ১২ লাখ মানুষ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও নদী পরিবর্তনের কারণে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান ০.৪%-এরও কম, তবু দেশের উপকূলীয় ও প্লাবনপ্রবণ অঞ্চলের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে disproportionate কষ্ট ভোগ করছে। উপদেষ্টা সাঈদা রিজওয়ানা হাসান জলবায়ু ন্যায়বিচার, সমতা এবং অভিযোজন তহবিল বাড়ানোর জোরালো আহ্বান জানান।
এর আগে তিনি কপ২৯-এর আরেকটি অনুষ্ঠানে ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানসিক স্বাস্থ্য’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।